বাংলাদেশের উন্নয়নে গণগ্রন্থাগারের ভূমিকা


ভূমিকা: গ্রন্থাগার একটি জাতির শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ধারক ও বাহক, একটি জাতির উন্নতির মাপকাঠি। একটি জাতি কত সভ্য, কত উন্নত তা তার গ্রন্থাগার পর্যালোচনা করলেই বুঝা যায়। একটি জাতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে গ্রন্থাগারের ভূমিকা অপরিসীম। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য গ্রন্থাগার অপরিহার্য। দীর্ঘদিনের ক্রমাগত পরিশ্রম, সাধনা, অধ্যবসায় ও অনুসন্ধানের ফলে আজ উন্নত দেশগুলো দর্শন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সাহিত্য, শিল্পকলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে চরম উৎকর্ষ সাধন করেছে তার পেছনে তাদের গ্রন্থাগারগুলির ভূমিকা অনস্বীকার্য। উন্নত বিশ্বের জনগণ গ্রন্থাগারের উপর নির্ভরশীল বিধায় তাদের সার্বিক উন্নতি সম্ভব হয়েছে। গ্রন্থাগার আমাদের জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক শক্তি। শিক্ষা ও জ্ঞানের শত-সহস্র ধারার মহামিলন ঘটায় গ্রন্থাগার। গণগ্রন্থাগারকে বলা হয় জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, বয়স, লিঙ্গ, পেশা কিংবা সামাজিক অবস্থানভেদে সবাইকে পাঠসেবা দেয়ার জন্য জ্ঞান ও তথ্যের ডালি সাজিয়ে সতত অপেক্ষমান এ প্রতিষ্ঠান। এজন্যই ১৯৪৯ সালে প্রচারিত UNESCO Public Library Manifesto তে গণগ্রন্থাগারকে “জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়” উল্লেখ করে এর ভূমিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে ÒThe Public Library should offer children, young people, men and women, opportunity and encouragement to educate themselves continuously to keep abreast of progress in all field of knowledge ...” 

ছবি : ইন্টারনেট

         উন্নয়ন: জাতীয় উন্নয়ন একটি সামষ্টিক ধারণা। একটি সমাজ তথা একটি জাতির প্রকৃত উন্নয়ন তখনই সম্ভব যখন সে জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মানবিক, নৈতিক, ধর্মীয় প্রভৃতির যুগপৎ উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। জাতীয় উন্নয়নের এসকল নিয়ামকগুলোকে অস্বীকার করে একটি দেশ তথা একটি জাতির উন্নয়ন আদৌ সম্ভব নয়। আর সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে একটি সচেতন জাতি গঠনই উপর্যুক্ত নিয়ামকগুলো অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 

         বাংলাদেশের উন্নয়ন: বিশ্বমানচিত্রের এক কনিষ্ঠ সদস্য বাংলাদেশ। শোষণ ও নিপীড়নের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছোট্ট এই দেশটি বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জন করেছে তাদের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা পেলাম একটি নতুন ভূ-খন্ড, নতুন পতাকা, নতুন পরিচয়। সেই থেকে শুরু হল নতুন পথচলা। বিজয়ের ৫০ বছরে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নে একটি দ্রæত বর্ধনশীল দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। ফলস্বরূপ জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) বাংলাদেশেকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সামাজিক ও মানবসম্পদ উন্নয়নেও বাংলাদেশের অবস্থান অগ্রসরমান। উন্নয়নের এই ক্রমোন্নতি ধরে রাখতেই বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Sustainable Development Goal) অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।  সেই সাথে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত ও প্রযুক্তিনির্ভর মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে।

 বাংলাদেশের উন্নয়নে গণগ্রন্থাগারের ভূমিকা: গ্রন্থাগার একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সভ্য ও শিক্ষিত সমাজের সুচিন্তার ফসল হিসেবে এর উৎপত্তি। সমাজের সার্বিক প্রয়োজনেই গ্রন্থাগারের জন্ম। একটি সমাজ তথা একটি জাতির উন্নয়নের বাহন গ্রন্থাগার। জাতির মেধা-মনন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সভ্যতা-সংস্কৃতির ধারণ ও লালন-পালনকরী হিসেবে গ্রন্থাগার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজ ও গ্রন্থাগার এই শব্দ দুইটি একে অপরের পরিপূরক। সুশিক্ষার প্রসার এবং জ্ঞান ও মননশীলতা চর্চার জন্য গ্রন্থাগারের কোন বিকল্প নেই। একটি সুন্দর ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে গ্রন্থাগার বিশেষ করে গণগ্রন্থাগারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সত্যিকার অর্থে শিক্ষার উন্নয়ন ব্যতিরেকে কোন জাতির সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের দেশে সমাজ উন্নয়ন ও জাতীয় সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে গণগ্রন্থাগারের ভূমিকাগুলো নিম্নরূপ:

·      জাতির ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক বাহক : গ্রন্থাগার একটি জাতির সাহিত্য, শিল্পকলা, কৃষ্টি-কালচার, ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা সংরক্ষণ করে। গ্রন্থাগারকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে একটি শিক্ষিত ও সচেতন জাতি। গ্রন্থাগার থেকে আহরিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়েই একটি সমাজ ও সভ্যতা টিকে থাকে যুগ যুগ ধরে। আর তাই সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই গ্রন্থাগার মানব সভ্যতার এক অপরিহার্য অংশ হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে।

·      জাতীয় সংহতি রক্ষায় : একটি জাতির উন্নতির জন্য একতা ও সংহতি অনস্বীকার্য। জাতীয় সংহতির অভাব দেখা দিলে সেই দেশ ও জাতির মাঝে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পরে। গ্রন্থাগার জাতীয় সংহতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম আয়োজন ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে গণগ্রন্থাগার জাতীয় সংহতি রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

·      গণতান্ত্রিক চেতানার বিকাশ সাধন : গণগ্রন্থাগার একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে তথ্য ও জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে গণগ্রন্থাগার সমাজের মানুষকে স্বশিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে এবং তাদের মাঝে গণতান্ত্রিক চেতানার বিকাশ সাধন করে।

·      মানব-সম্পদের উন্নয়নে : পরিকল্পিতভাবে মানব-সম্পদ উন্নয়ন যে কোন দেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। একটি সভ্য ও শিক্ষিত জাতি গঠনে তার মানব-সম্পদ (Human Resource) উন্নয়নের বিকল্প নেই। দক্ষতা উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজনের মাধ্যমে গণগ্রন্থাগার মানবসম্পদ উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

·      অর্থনৈতিক উন্নয়নে : সভ্যতার সূচনালগ্নে কৃষিই ছিল অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ইউরোপে শিল্প-বিপ্লবের পূর্ব পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ছিল মূলত কৃষিভিত্তিক। ধীরে ধীরে মানুষ যখন বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞান, কলা-কৌশল শিখতে শুরু করল তখন থেকেই শিল্প হয়ে উঠলো অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু বর্তমানে কৃষি, শিল্প সবকিছুকে ছাড়িয়ে তথ্য ও জ্ঞান আজ পণ্য হিসেবে (Knowledge Economy) বিশ্ব অর্থনীতিতে এক বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এজন্য বর্তমান সভ্যতাকে বলা হয় তথ্যভিত্তিক সমাজ বা সংক্ষেপে তথ্যসমাজ। যে জাতি যত বেশী তথ্যসমৃদ্ধ, যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত। উন্নত দেশগুলো তাই আজ জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করছে। আর এভাবেই তথ্য ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে গ্রন্থাগারের বিকল্প নেই।

·      সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সাধনে : সংস্কৃতি একটি জাতির প্রাণ। প্রাণ ছাড়া যেমন জীব বাঁচতে পারেনা তেমনি নিজস্ব সংস্কৃতি ছাড়া একটি জাতির অস্তিত্ব কল্পনা করা যায়না। সাংস্কৃতিক অবক্ষয় একটি জাতিকে ধ্বংসের চূড়ান্ত স্তরে নামিয়ে দেয়। একটি দেশের তথা একটি জাতির সংস্কৃতিকে বাঁচাতে গণগ্রন্থাগারের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই।

·      শিক্ষিত ও সচেতন জাতি গঠনে : আমারা সবাই জানি ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড’। একটি দেশের উন্নয়নে প্রধান অন্তরায় শিক্ষার অভাব অর্থাৎ অশিক্ষা একটি দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। উন্নতবিশ্বে শিক্ষার হার যেখানে ৯০% থেকে ১০০% সেখানে আমাদের দেশে শিক্ষার হার মাত্র ৭৫.৬%। সুতরাং জাতীয় উন্নয়ন তরান্বিত করতে এবং একটি শিক্ষিত জাতি গঠনে গ্রন্থাগার ব্যবহারের প্রতি জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে।

·      গবেষণা কর্মকান্ডে : বিশ্ব আজ জ্ঞান-বিজ্ঞানে চরম উৎকর্ষ লাভ করেছে। আর এর পেছেনে গ্রন্থাগারের ভূমিকা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। একজন গবেষককে প্রথমেই তার গবেষণার বিষয়টির উপর বিশেষ ব্যুৎপত্তি লাভ করতে হয়। আর ঐ বিশেষ বিষয়ের সকল তথ্যের সঠিক সন্ধান এবং সরবরাহ করতে পারে একমাত্র গ্রন্থাগার।

·      অজ্ঞতা ও কুসংস্কার দূরীকরণে : অজ্ঞতা ও কুসংস্কার একটি জাতিকে বিভ্রান্তির অতলে তলিয়ে দেয়। কুসংস্কারাচ্ছন্ন একটি জাতি কখনোই উন্নতি করতে পারে না। আর এজন্য একটি জাতিকে কুসংস্কারমুক্ত, বিজ্ঞানমনস্ক একটি আধুনিক, শিক্ষিত জাতিতে পরিণত করতে গ্রন্থাগারের দায়িত্ব অপরিসীম।

·      সমাজিক অবক্ষয় রোধে : নানা রকম অন্যায়-অবিচার, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, মাদক, যৌতুক, বাল্যবিবাহ ইত্যাদির মত সমাজিক অপরাধের ব্যাপারে জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরিতেও গণগ্রন্থাগার সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে।

·      দুর্নীতি প্রতিরোধে : বাংলাদেশ কিংবা উন্নয়নশীল দেশসমূহ কেবল নয়, বরং সারা বিশ্বজুড়েই দুর্নীতি আজ উন্নয়নের পথে একটি প্রধান বাধা। দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক অবনতির সাথে সাথে বাড়ছে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারছেনা, দেখা দিচ্ছে সুশাসনের অভাব। এককথায় দুর্নীতি আমাদের জাতীয় উন্নয়নকে প্রবলভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। গ্রন্থাগার জনগণের মাঝে তথ্য ও জ্ঞান বিতরণ এবং সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ করত জাতীয় উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

·      সৎ ও আদর্শ নাগরিক গঠনে : একজন সৎ, আদর্শ ও সচেতন নাগরিক একটি জাতির মূল্যবান সম্পদ। একটি জাতির সামগ্রিক উন্নতি নিশ্চিত করতে সৎ ও আদর্শ নাগরিকের প্রয়োজনীয়তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। আর এই মহান দায়িত্ব পালনে গণগ্রন্থাগার এক অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রন্থাগারে সংগ্রহীত বিভিন্ন ধরণের বই পাঠের মাধ্যমে মনীষীদের মূল্যবান সব চিন্তার সাথে আমাদের চিন্তার সেতুবন্ধন রচিত হয়। এতে করে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে নিজের মধ্যে একটা মানবীয় মূল্যবোধ ও স্বাধীন চিন্তা শক্তির উন্মেষ ঘটে। ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা ইত্যাদির মাঝে পার্থক্য করার মত বিবেক জাগ্রত হয় এবং সর্বোপরি পরিশীলিত একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা যায়।

·      সামাজিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিকরণে : গ্রন্থাগার বিশেষকরে গণগ্রন্থাগার এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে ধর্ম-বর্ণ, ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলেই প্রবেশ করতে পারে। এতে করে সহজেই একজন অন্যজনের সংস্পর্শে আসতে পারে। আর এভাবে সবার মাঝে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া নিয়মিত বই পাঠের  মাধ্যমে আমাদের মাঝে গভীর জীবনবোধ, চিন্তার উদারতা, পরমত সহিষ্ণুতা ইত্যাদির  মত নতুন নতুন গুণ জন্ম লাভ করে। যা সমাজে সুন্দর ও শান্তিময় পরিবেশ তৈরি করে।

·      আধুনিক তথ্যনির্ভর সমাজ বিনির্মাণে : আমরা আগেই বলেছি আধুনিক সমাজ তথ্যনির্ভর সমাজ। তথ্য বিস্ফোরণের এই যুগে প্রতিনিয়ত নিত্য-নতুন তথ্য আমাদের জানতে হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা খুব সহজেই আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পেয়ে যাই। প্রযুক্তির এই আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে আমরা গ্রন্থাগারকে জনগণের জন্য একটি তথ্যকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। 

ছবি : ইন্টারনেট

·      সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে : মানুষের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রতকরণ, উন্নত জীবনবোধ গঠন, চিন্তার স্বাধীনতা, বিবেকের স্বচ্ছতা, জ্ঞানের ব্যপকতা, দেশপ্রেম, নীতি-নৈতিকতা, উন্নত চরিত্র এককথায় একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে এবং সর্বোপরি একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে গ্রন্থাগার এক অপরিহার্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান ।

     শেষকথা: গ্রন্থ একটি বুদ্ধিবৃত্তিক তথা সৃজনশীল পণ্য। মানব শরীরের জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন তেমনি আমাদের মনের খোরাক যোগায় বই। গ্রন্থাগার সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্যতা তথা একটা গোটা জাতির অগ্রগতি এবং এর ধারাবাহিকতা রক্ষার মূল হাতিয়ার। সমাজের প্রয়োজনেই গ্রন্থাগারের জন্ম। সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রন্থাগার সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও সুশীল সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গণগ্রন্থাগারের জীবনব্যাপী শিক্ষার মাধ্যমে একজন মানুষ যেমন স্বশিক্ষিত হয় সেই সাথে তার পরিমন্ডলকেও সচেতন করে তুলতে পারে। যার প্রভাব পুরো সমাজ তথা জাতির উপর পরে। এভাবে মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রন্থাগার একটি সমাজ তথা একটি জাতির উন্নয়নে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে থাকে।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুনাগরিক তৈরি ও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে গ্রন্থাগারের ভূমিকা

পাঠ, পাঠাভ্যাস ও পাঠক